রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৯

ছ- হ্রস্বউকার, 'কি' এর পরে

কিছু কিছু দিন আসে
রাতের মত নিঝঝুম।
এসে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে খাটের পাশে ।
মাথার কাছে ।

যেন আমার খুব অসুখ করেছে ।
টেবিলের ওপর রাখা কমলালেবুর নরম অস্তিত্বে
সে তখন 'জীবনানন্দ-বোধ' খোঁজে।

কোন কোন দুপুর সন্ধ্যের মত গোপন।
জানালায় উঁকি দিয়ে আকাশ দেখার মত আপন ।

কিছু কিছু রাত স্বচ্ছ ।
ঠিক কাঁচের মতন ।
বিন্দু বিন্দু জল
গুড়ি গুড়ি স্ট্রীটল্যাম্পের আলোয়
গল্পের ঝুলির মতন।

কিছু কিছু বেলায়
স্মৃতি, বাস্তবতা , স্বপ্ন
সব একরকম ।
ঘোলাটে
গোলাপে
প্রলাপে
তালগোলে
সেঁটে থাকা মন।

কিছু শব্দ বার বার হবার ।
আজীবন বেজে যাবার ।
নীরবতাকে ছাপিয়ে -
কাঁচকলা দেখিয়ে
বিবাগী-উদাস ,
স্থায়ী ।


ভেজা রাস্তা , ভালবেসে
যেমনি বৃষ্টিকে বুকে জড়িয়ে  ধরে,
মেঘের বুঝি তখন প্রশান্তিতে  চোখ বুজে আসে ?!
পাহাড় , পবন , ঝিকিমিকি তারা,
সবাইকে ডেকে ডেকে
চোখের ইশারায়-
কালো পিচের সাথে বৃষ্টির গভীর
প্রণয়কে দেখিয়ে বুঝি মেঘ ঠোঁট চেপে হাসে? স্নেহভরে?



পিচ রাস্তা
অরণ্যের শর্বর , এরা
একই রহস্য পান করা বোদ্ধা ।
যে সুরায় থাকে প্রেম ।
থাকে আদিগন্ত অস্তিত্ব
ধীর গভীর গম্ভীর ।

টিনের চালার ধার চুইয়ে
ঝুলে থাকে যে সদ্য শিশির
গোটা পৃথিবীর উল্টো আয়না হয়ে ,
তাকে এসে আলতো আলিঙ্গন
দেয় সূর্য   ।


সেই সরলতায় কিছু কিছু
দিন বাঁচতে ইচ্ছে করে ।
কিছু কিছু মুহূর্তে
ছ- এর নিচে হ্রস্ব- উকার হয়ে
'কিছু কিছু' সেজে
ঝুলে থাকতে ইচ্ছে করে
শূন্যে ।


কিছু কিছু ।
খুব বেশি নয় ।

1 টি মন্তব্য:

  1. এভাবেও যে ভাবা যায়, লিখা যায়, ছবি দেখানো যায়- আপনার কবিতা পড়তে গিয়ে তখন অবাক হয়ে উপলব্ধি করি-
    "টিনের চালার ধার চুইয়ে
    ঝুলে থাকে যে সদ্য শিশির
    গোটা পৃথিবীর উল্টো আয়না হয়ে,"

    কবিতা পড়বার পর আমার নিজের কাছেও মনে হল আমারো বুঝি এভাবেই ইচ্ছে করে বেঁচে থাকতে, কিছু কিছু-
    "সেই সরলতায় কিছু কিছু
    দিন বাঁচতে ইচ্ছে করে।
    কিছু কিছু মুহূর্তে
    ছ- এর নিচে হ্রস্ব- উকার হয়ে
    'কিছু কিছু' সেজে"

    কোনদিন একটা আস্ত কবিতার বই হাতে নিয়ে দেখতে ইচ্ছে করে সেখানে কবির নাম 'ধ্রুপদী', যেকোন দিন।

    উত্তরমুছুন