মাঝে মাঝে খুব একটা চিঠি পেতে ইচ্ছে করে।
চিঠিটা কার কাছ থেকে আসছে জরুরী না
এর প্রেরক যেন নিখোঁজই থাকে।
কিংবা ধরো, খোঁজ-জানলেও-বলতে-মানা।
তারপর শোননা কি থাকবে ওতে লেখা।
একটা গরুর গাড়ি অন্ধকার করে আসা আকাশের নীচে
মাথা ছুঁই ছুঁই মেঘ, মাথায় করে
নদীর ধার বরাবর
আধা ন্যাড়া হলদেটে মাঠের পাশে
ক্যাঁচক্যাঁচ করে হাঁটছে।
লেখা থাকবে পিঁপড়ের ঢিবি।
পৈতে পরা বড় মামার তুলসী গাছের প্রীতি।
নিষ্পাপ শিশু থাকবে।
ভাত-ঘুম দুপুরবেলায় হঠাৎ
যেমন চুড়িওয়ালির অযাচিত হাঁকডাক
ফটক জুড়ে।
তার ঝাঁপিতে যেমন থাকে হরেক রকম রেশমী চুড়ি
রিনিঝিনি
পানসে বেগুন, হলদে সবুজ,
আকাশী রঙা ওই এক ডজন।
কালোর ওপর রূপোলী ছিটে।
খয়ের মাখা কাঁচের মাঝে মিলে মিশে
সোনালী বুটি?
ক্যাটকেটে কমলার পাশে গুরুগম্ভীর মাস্টার হয়ে
রেগে থাকা বাদামী ডজন।
এরকমই টুকিটাকি গোটা একটা
ছোটবেলার আদ্যপান্ত স্মৃতির ঝাঁপি
লেখা থাকবে।
ঘি রঙের লেফাফাতে
পুরনো দিনের গন্ধ থাকবে।
যত খুশী লেফাফা পেতে
ঠিক ততই মন-কেমন-করা
উদাস হবো , গন্ধ নিতে।
চোখের সামনে ভেসে ওঠবে
মা’র বুকের ওম পাওয়া মুরগীর ছানার মতন
এক একটা আদুরে স্মৃতি।
ডাকপিয়নের সাইকেল, চৈত্রের ভ্যাপসা গরম,
ধূলোর সাথে যত্নে মাখা এক লেফাফা
এক অবেলার রোমন্হন।
কাঁচের চুড়ি
রিনিঝিনি
গরুর গাড়ি
হলদেটে মাঠ
উদাসী পাখি
ব্যস্ত নদী
মাঝির হাঁক
বাড়ীরকাজ হোম-টিউটর লোডশেডিং
মশার কামড়
জোনাক ডাঙর
খড়ের পু্ঁজি
মেঘ থেকে রোদ
হাবিজাবি ।
অক্ষরের ভাঁজে ভাঁজে
না লেখা সব
সকল গলির অলিগলি।
এমন চিঠি।
প্রেরক: অজানা
প্রাপক: অজরুরি
স্মৃতি: ভুরি ভুরি
বিরামহীন
রিনিঝিনি
রিনিঝিনি।